প্রিয়াঙ্কা আইচ ভৌমিক, কলকাতাঃ দেশের ৮০ কোটি ৩৫ লক্ষ গরিব মানুষের জন্য ৫ কিলো করে চাল আর গমের গত জানুয়ারি মাস থেকেই ছাঁটাই করেছে কেন্দ্রীয় সরকার। পাশাপাশি বেলাগাম মূল্যবৃদ্ধিতে নাজেহাল সাধারণ মানুষ। এই জোড়া সমস্যার মোকাবিলায়, এবং রেশন দোকান থেকে ডাল তেল চিনি ন্যায্য মূল্যে বন্টনের দাবি সহ মোট ১১ দফা দাবিতে, মঙ্গলবার সকাল থেকে শুরু হল, রাজ্যের রেশন ডিলারদের তিন দিনের লাগাতার ধর্মঘট। ধর্মঘটের জেরে ৭২ ঘণ্টা রেশন মিলবে না গ্রাহকদের। অভূতপূর্ব এই পরিস্থিতির জন্য কেন্দ্রে সরকারকেই দায়ী করেছেন, অল ইন্ডিয়া ফেয়ার প্রাইস শপ ডিলারস ফেডারেশনের ভারতীয় সম্পাদক বিশ্বম্ভর বসু। মঙ্গলবার রেশন বনধের প্রথমদিন ইভিএম নিউজের প্রতিনিধিকে টেলিফোনে নিজেদের দাবি নিয়ে ব্যাখ্যা করেছেন, বিশ্বম্ভর বসু।
তিনি বলেন,‌ “সরকার এই আন্দোলনের বিরোধিতা করছে জেনেও, আমরা আন্দোলন চালিয়ে যেতে বদ্ধপরিকর। যেকোনও পরিস্থিতির মোকাবিলা করার জন্য আমরা প্রস্তুত।“

আন্দোলনের মূল দাবিগুলি সম্পর্কে তিনি জানালেন, “জানুয়ারি মাস থেকে কেন্দ্রীয় সরকার ৮০ কোটি ৩৫ লক্ষ গরীব মানুষদের জন্য ৫ কিলো করে চাল গমের বরাদ্দ কমিয়ে দিয়েছে। এই চাল গমের বরাদ্দ পুনর্বহালের দাবিতে, দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির বাজারে ডাল তেল চিনি রেশন দোকান থেকে ন্যায্য মূল্যে বন্টনের অনুমতি এবং বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে নমনীয়তা আনার দাবিও আমরা জানিয়েছি। সেইসঙ্গে রেশন ডিলারদের ন্যুনতম মাসিক ৫০ হাজার টাকা আয় সুনিশ্চিত করাও এই আন্দোলনের অন্যতম দাবি”।

রেশন ডিলারদের এই তিনদিনের
আন্দোলনের অন্যান্য দাবি গুলি হল- ১.) কেন্দ্রীয় সরকার দ্বারা নিযুক্ত “ওয়ার্ল্ড ফুড প্রোগ্রাম”-এর সুপারিশ মেনে কুইন্টাল পিছু ন্যূনতম ৭৬৪/-টাকা কমিশন লাগু করা।
২) কেন্দ্রীয় খাদ্য প্রতিমন্ত্রীর বিবৃতিকে মান্যতা দিয়ে গ্রাহকদের দুর্ভোগ ও হয়রানি কমানোর জন্য জরুরি পরিস্থিতিতে e-POS মেশিনে  আধার নম্বর দিয়ে রেশন বিলি করতে দিতে হবে।
৩) চাল, গম ও চিনিতে কুইন্টাল পিছু ১ কেজি করে ‘হ্যান্ডলিং লস’-এর সুযোগ দেওয়া, ৪) গুণমান বজায় রাখতে শুধুমাত্র চটের বস্তায় খাদ্যশস্য সরবরাহ করা।
৫) গ্রামীণ এলাকায় রেশন দোকানগুলিকে চাল ও গমের প্রত্যক্ষ বরাতদাতা হিসাবে নিয়োগ করা।, ৬) “সকলের জন্য খাদ্য” আর “পশ্চিমবঙ্গ রেশন মডেল” অনুসরণ করে দেশজুড়ে প্রত্যেক নাগরিককে রেশন সামগ্রী সরবরাহ করা।
৭) রাজস্থান সরকারের পদক্ষেপ অনুসরণ করে সারাদেশে করোনায় মৃত্যু হওয়া ডিলারদের পরিবারকে আর্থিক ক্ষতিপূরণ দেওয়া, এবং
৮) সমস্ত রাজ্য এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের রেশন ডিলারদের পাওনা কমিশন অবিলম্বে পরিশোধ করা।

আন্দোলনকারী রেশন ডিলারদের সংগঠনের সূত্রে জানা গেছে এই রাজ্যের মোট ২০,২৮১ জন রেশন ডিলারের মধ্যে ফেডারেশনের অধীনে থাকা ১৭,১২১ জন ডিলারই মঙ্গলবার দোকান খোলেননি। পাশাপাশি দেশের মোট ৫ লক্ষ ৩৮ হাজার রেশন ডিলারও এই ধর্মঘটে সামিল হয়েছেন। কেন্দ্রীয় খাদ্যমন্ত্রী পীযুষ গোয়েলের কাছ থেকে ইতিবাচক সাড়া না মিললে, আগামী ২২ মার্চ পার্লামেন্ট অভিযান করা হবে বলেও রেশন ডিলারদের ওই সর্বভারতীয় সংগঠনের তরফে হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে।

বিশ্ব জুড়ে

গুরুত্বপূর্ণ খবর

বিশ্ব জুড়ে

গুরুত্বপূর্ণ খবর