লোক

ব্যুরো নিউজ, ২১ ডিসেম্বর: লোকসভায় পাশ ৩ বিল 

কার্যত বিরোধী শূন্য লোকসভায় অনায়াসে পাশ হয়ে গেল ৩ টি গুরুত্বপূর্ণ বিল। সিআরপিসি, আইপিসি এবং ভারতীয় সাক্ষ্য বিল নতুন করে পাশ হয়ে গেল বুধবার। ৩ নতুন বিলের নাম দেওয়া হয়েছে ভারতীয় ন্যায় সংহিতা ২০২৩, ভারতীয়  নাগরিক সুরক্ষা সংহিতা ২০২৩ এবং ভারতীয় সাক্ষ্য বিল ২০২৩। তবে বুধবার যখন এই ৩ বিল লোকসভায় পেশ করা হয় তখন প্রায় দুই তৃতীয়াংশ বিরোধী সাংসদ লোকসভায় অনুপস্থিত ছিলেন। কারণ, লোকসভায় অধিবেশন চলাকালে দুই বহিরাগতের সাংসদদের মাঝে ঝাঁপ দেওয়া এবং রঙিনস্প্রে ছড়িয়ে দেওয়াকে কেন্দ্র করে প্রবল বিক্ষোভ শুরু হয়। বিরোধীরা সমালোচনায় ফেটে পড়েন সংসদের মধ্যে ও বাইরেও। সেদিন সংসদের বাইরেও বহিরাগতরা কালার-স্প্রে করেন। আর তাতেই সংসদের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন। আর তাই নিয়ে লোকসভা ও রাজ্যসভা দুই কক্ষেই বিরোধিরা প্রতিবাদে সোচ্চার হয়। ও অনেকেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের পদত্যাগ দাবি করেন। আর এরপরেই অধীর রঞ্জন চৌধুরী-সহ মোট ২ কক্ষের ১৪৫ জনকে সাসপেন্ড করা হয়।  ঘটনার জেরে তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় লোকসভার চ্যেয়ারম্যানের উদ্দেশ্যে নানান অঙ্গ-ভঙ্গি করে পার্লামেন্টের সিঁড়িতে। সেখানে উপস্থিত ছিলেন তৃণমূল সাংসদেরা। আর তাতেই বেজায় চটেছেন জগদীপ ধনখড়। ধনখড় জানিয়ে দেন এই অপমান তিনি সহ্য করবেন না। আর এই সময়েই বিরোধী শূন্য লোকসভায় সংখ্যা গরিষ্ঠতার জেরে ৩ বিল পাশ করিয়ে নায় বিজেপি। বিরোধীদের সুর আরও চওড়া হয় তাদের অনুপস্থিতিতে বিল পাশ করানোর জন্য। তাদের অভিযোগ, সংসদের কোনও কক্ষের বিল নিয়ে আলোচনার সুযোগই দেয়নি বিজেপি। ওই ৩ বিল আরও বেশি কঠিন হল কলে অভিমত বিরোধীদের। তবে, বিজেপির যুক্তি ব্রিটিশ আমলের ওই পুরাতন আইন এখন আর প্রযোজ্য হতে পারেনা।

গঙ্গাসাগর মেলা নিয়ে বৈঠক মমতার 

নতুন ভারতীয় সংহিতা ২০২৩ বিলে পূর্বের অনেকটাই রাখা হয়েছে অপরিবর্তিত। তবে চুরি-ছিনতাইয়ের মতো ছোট অপরাধীদের সমাজসেবা মূলক কাজে যুক্ত করার বিধান দেওয়া হয়েছে। ভারতের বা ভারতবাসীড় ঐক্য, নিরাপত্তা, আর্থিক সুরক্ষা, মান-সম্মান যদি বিঘ্নিত হয়, তবে সেই কাজকে নয়া বিলে রাখা হচ্ছে সন্ত্রাসবাদী তালিকায়। এছাড়া, সাইবার ক্রাইম, তোলাবাজি, কোনও গোষ্ঠীর হয়ে অপহরণ বা এই ধরনের কাজে যুক্ত থাকলে তা অপরাধ হিসাবে গন্য হবে। বদল করা হয়েছে রাজদ্রোহের ধারা। সে জায়গায় সংযুক্ত করা হয়েছে নয়া দেশদ্রোহের ধারা। জাতি ধর্ম – ভাষা ব্যক্তিগত বিশ্বাস  এমন ধরনের কোনও বিশেষ পরিচয়ের ওপর নির্ভর করে ৫ জন বা তার বেশি মানুষ কাউকে খুন করে অথবা গন- পিটুনিতে হত্যা করে তবে সেক্ষেত্রে অপরাধীদের যাবজ্জীবন কারাবাস অথবা মৃত্যুদণ্ডের বিধান দেওয়া হয়েছে। যৌন নির্যাতন ঘটলে অত্যাচারিতার মৌখিক ও ভিডিও বয়ান রেকর্ড করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। হিট এন্ড রান- এর মামলার ক্ষেত্রে অভিযুক্তের সর্বোচ্চ ১০ বছরের জেল হতে পারে। তবে আহত ব্যক্তিকে যদি অভিযুক্ত চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে নিয়ে যায়, সেক্ষেত্রে তার শাস্তি কমতে পারে। তাছাড়া কোনও ঘটনা ঘটলে যে কোনও থানায় ‘জিরো এফআইআর’ দাখিল করা যাবে। প্রশাসন সেই এফআইআর ২৪ ঘণ্টার মধ্যে নিকটবর্তী থানায় পাঠাবে।

ভারতীয় নাগরিক সুরক্ষা সংহিতা বিলে ১৯৭৩ সালে ফৌজদারি  নিয়মবিধিকেই প্রতিষ্ঠিত করেছে। কোনও অপরাধে ৭ বছর কারাদণ্ড হলে সেক্ষেত্রে ফরেন্সিক তদন্ত বাধ্যতামূলক বলে বিলে উল্লেখ করা হয়েছে। কোনও নির্যাতনের ক্ষেত্রে নিগৃহীতার শারীরিক পরীক্ষা-নিরীক্ষার রিপোর্ট ৭ দিনের মধ্যে পাঠাতে হবে তদন্তকারী অফিসারের কাছে। শাস্তি এড়ানোর জন্য কোনও ঘোষিত অপরাধী পালিয়ে গেলে বা তাকে গ্রেফতার করা না গেলে সেক্ষেত্রে বিচার চালানো যাবে ও  রায় ঘোষণার প্রস্তাবও দেওয়া হয়েছে। তদন্ত বা আইনি পদ্ধতির দরকার হলে গ্রেফতার না হওয়া সন্দেহভাজন ব্যক্তির আঙ্গুলের ছাপ বা ভয়েস স্যাম্পেল সংগ্রহ করে পরীক্ষা করা যাবে। নতুন বিলে ক্ষমা ভিক্ষার আর্জির সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হয়েছে। মামলার প্রথম শুনানির ১ সপ্তাহের মধ্যে পুলিশকে আদালতে নথি পেশ করতে হবে। চার্জশিট পেশের ৯০ দিনের মধ্যে তদন্ত শেষ করতে হবে ও তার ১ মাসের মধ্যেই রায় ঘোষণা করতে হবে।

ভারতীয় সাক্ষ্য বিলে মৌখিক ও তথ্য প্রমানের সঙ্গে ইলেকট্রনিক রেকর্ডকেও প্রমান হিসাবে গ্রহণ করতে হবে। সেই সঙ্গে আদালতে মামলার শুনানি তদন্ত ও বৈদ্যুতিন বিচার প্রক্রিয়া নিয়ে আসার প্রস্তাব করা হয়েছে। ডিজিটাল সাক্ষ প্রমান পেশের পদ্ধতি হিসাবে ইলেক্ট্রনিক কমিউনিকেশন যন্ত্র ব্যবহারের অনুমতি চাওয়া হয়েছে। বলা হয়েছে, সংশ্লিষ্ট ম্যাজিস্ট্রেটের সার্টিফিকেট ছাড়া থানায় পুলিশের সামনে কোনও স্বীকারোক্তি গ্রাহ্য করা হবে না। তবে, বন্দী অভিযুক্তের থেকে যদি রহস্য উদ্ঘাটনের তথ্য পাওয়া যায় তবে তা প্রমান হিসাবে গন্য হতে পারে। পলাতক অভিযুক্ত বা অ্যারেস্ট ওয়ারেন্টে সারা না দেওয়া অভিযুক্তের ক্ষেত্রে যৌথ বিচারে বিধান দেওয়া হয়েছে। ইভিএম নিউজ

বিশ্ব জুড়ে

গুরুত্বপূর্ণ খবর

বিশ্ব জুড়ে

গুরুত্বপূর্ণ খবর