ইভিএম নিউজ ব্যুরোঃ ভাঙড়ে আইএসএফ বনাম তৃণমূলের সংঘর্ষ, ও তার পরিপ্রেক্ষিতে ধর্মতলায় ধুন্ধুমারের ঘটনায় লালবাজারের দায়ের করা মামলায়, বৃহস্পতিবারই বিধায়ক নওসাদ সিদ্দিকির কারাবাসের মেয়াদ বৃদ্ধি করেছে আদালত। এবং তাৎপর্যপূর্ণভাবে সেই সংক্রান্ত আরও একটি মামলায়, শুক্রবার বারুইপুর আদালতের নির্দেশে, জেলবন্দি আইএসএফ বিধায়ককে নিজেদের হেফাজতে নিল, কলকাতার লেদার কমপ্লেক্স থানার পুলিশ। এবং এই গোটা ঘটনায় চমকপ্রদক মাত্রা জুড়ে দিলেন, বিধায়ক নওসাদ সিদ্দিকী নিজেই। শুক্রবার বারুইপুর আদালতের নির্দেশের পর বাইরে এসে নওসাদ সাংবাদিকদের উদ্দেশ্য করে বলেন, ভাঙড়ে তৃণমূলের ভোটব্যাঙ্কে ধস নেমেছে। তাই শাসকদলের নির্দেশেই যে কোনও মূল্যে তাঁকে হেফাজতে রেখে, আইএসএফ কর্মীদের সন্ত্রস্ত করে রাখতে চাইছে পুলিশ। যাতে পঞ্চায়েত নির্বাচনে তৃণমূল কংগ্রেস বাড়তি সুবিধে পায়।

নওশাদের এই বিস্ফোরক অভিযোগের পরেই, রাজ্য রাজনীতিতে ফের সংখ্যালঘু ভোটব্যাংক শাসকের একচ্ছত্র আধিপত্য আদৌ আর আছে কিনা, তা নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন করতে শুরু করেছে। বিরোধীশিবিরের পাল্টা প্রশ্ন, তবে কি আইনি যুগ থেকে বাঁশ কাটিয়ে রাজনৈতিক অংকেই নওশাদের জামিনের বিরোধিতা করা হয়েছে?

রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের ব্যাখ্যা, একদিকে ভাঙর গিয়াসুদ্দিন মোল্লা, আরাবুল ইসলাম ও কাইজার আহমেদ গোষ্ঠির মধ্যে পারস্পরিক বিবাদে ভাঙড়-সহ তার আশপাশের এলাকাগুলোতে শাসক দলের শক্তি ক্ষয়হচ্ছে। অন্যদিকে ফিরহাদ হাকিম ও সিদ্দিকুল্লাহ চৌধুরীর মধ্যস্থতায় হুগলী ফুরফুরা শরীফের পীরজ্বাদা তহ্বা সিদ্দিকীকে সামনে রেখে পীরপন্থি বাঙালি মুসলিম ভোটের যেভাবে সিংহভাগ অংশকে নিজেদের কব্জায় রেখেছিল তৃণমূল তাতে চিড় ধরাতে পেরেছেন পীরজ্বাদা আব্বাস সিদ্দিকী ও তাঁর ভাই নওশাদ। তার উপরে আনিস খানের হত্যা-সহ একাধিক ইস্যুতে রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে ক্ষুব্ধ রাজ্যের সংখ্যালঘু সমাজের প্রধান অংশের বেশিরভাগ মানুষ।

এমনকী নওশাদ গ্রেফতার হওয়ায় তৃণমূল ঘনিষ্ঠ হিসাবে পরিচিত তহ্বা সিদ্দিকীও রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে কিছুটা হলেও মুখ খুলেছেন, ফুরফুরার অন্যান্য পীর ও পীরজ্বাদারাও সুর চড়িয়েছেন রাজ্যের শাসক দলের বিরুদ্ধে। এই অবস্থায় পরিস্থিতি শাসক দলের একেবারেই হাতের বাইরে। যার জেরে অনেকটা দিশেহারা হয়েই নওশাদ-সহ আইএসএফ-এর নেতা-কর্মীদের শায়েস্তা করে তাঁদের মুখ বন্ধ করতে চাইছে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা। যদিও আইএসএফ কর্মীদের হুঁশিয়ারি, “নওশাদ ভাই-সহ দলের কর্মীদের মুক্তি দেওয়া না হলে এই সরকারের রাতের ঘুম হারাম করে দেওয়া হবে।” এখন নতুন করে নওশাদ সিদ্দিকীকে পুলিশি হেফাজতে পাঠানোয় পরিস্থিতি আরো কিছুটা জটিল হলে বলেই মনে করা হচ্ছে। কারণ, নতুন করে পুলিশ হেফাজতে পাঠানোর অর্থই হল সহজে জামিন পাবেন না নওশাদরা। এমনটাই মত ওয়াকিবহাল মহলের।

 

বিশ্ব জুড়ে

গুরুত্বপূর্ণ খবর

বিশ্ব জুড়ে

গুরুত্বপূর্ণ খবর