ব্যুরো নিউজ, ১৫ জানুয়ারি: মালদ্বীপ থেকে ভারতীয় সেনা হাঁটানোর সময়সীমা বেঁধে দিলো মালদ্বীপ সরকার
চলতি বছরের গত সপ্তাহে ৫ দিনের চিন সফরের পরেই ভারতের বিরুদ্ধে সুর চড়ানোর ইঙ্গিত দিয়েছিলেন মলদ্বীপের প্রেসিডেন্ট মহম্মদ মুইজ্জু। শনিবার তিনি রীতিমতো হুঁশিয়ারির সুরে জানিয়েছিলেন, কাউকে ধমকানোর ছাড়পত্র দেয়নি তার সরকার। তার পরের দিনই অর্থাৎ রবিবার ভারতীয় সেনাকে দ্রুত মলদ্বীপ ছাড়তে বলল তাঁর সরকার। তবে এ বার শুধু কূটনৈতিক স্তরে আর্জি জানানোই নয়, আগামী ১৫ মার্চের মধ্যে ভারতীয় সেনাকে মলদ্বীপ ছাড়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে ভারতীয় সেনাকে। তাঁর সচিবালয়ের শীর্ষ আধিকারিক আবদুল্লা নাজ়িম ইব্রাহিম জানিয়েছেন, ‘ভারতীয় সেনারা মলদ্বীপে থাকতে পারবেন না। কারণ প্রেসিডেন্ট মুইজ্জু ও তাঁর সরকার এমনই সিদ্ধান্ত নিয়েছে”।
সন্দেশখালির ঘটনায় রাজ্য প্রশাসনকে কড়া ভাষায় আক্রমন রাজ্যপালের
এমনিতেই ‘চিনপন্থী’ বলে পরিচিত মুইজ্জু। চিন সফরে গিয়ে তিনি সেখানে জিনপিংয়ের সঙ্গে বৈঠক করেন। সেই বৈঠকে দুই দেশের মধ্যে কিছু দ্বিপাক্ষিক আর্থিক ও বাণিজ্যিক সহযোগিতা সংক্রান্ত চুক্তিও সই হয়। তবে কেউ কেউ মনে করছেন মুইজ্জুর ভারতীয় সেনা সরানোর পিছনে চিনের হাত আছে। কারণ, ভারত ও মালদ্বীপের মধ্যে চলা বিতর্কের মাঝেই খানিক সুর নরমের ইঙ্গিত দিয়েছিল মলদ্বীপ সরকার। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও ভারতকে নিয়ে অবমাননাকর মন্তব্য করার অভিযোগে সাসপেন্ড করা হয়েছিল মলদ্বীপের ৩ মন্ত্রীকে।
এরপর সমাজমাধ্যমে ভারতীয় নেটাগরিকদের ‘বয়কট মলদ্বীপ’-এর ঠেলা সামলাতে হিমশিম খেতে হয় ভারতের দক্ষিণ-পশ্চিম ভারত মহাসাগরের এই দ্বীপরাষ্ট্রকে। আগে থেকে মলদ্বীপে ঘুরতে যাওয়ার বিমান-হোটেলে টিকিট বুক করে রাখার পরেও তা বাতিল করেন একের পর এক ভারতীয়। প্রেসিডেন্ট হওয়ার কিছু দিনের মধ্যেই ভারতের নাম না করলেও তিনি স্পষ্টভাবে ভারতকে রীতিমতো হুঁশিয়ারি দিয়ে মুইজ্জু বলেন, ”আমাদের দেশের মাটি থেকে সমস্ত বিদেশি সেনাকে আমরা তাঁর নিজের দেশে ফেরত পাঠাব”। তাঁর ধারনা, মালদ্বীপের সার্বভৌম ক্ষমতাকে খর্ব করতেই সেনা রেখে দিয়েছে ভারত। কারণ, ভারত মহাসাগরের ওই দ্বীপরাষ্ট্রের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ প্রশাসনিক ও শিল্পক্ষেত্রের নিরাপত্তার দায়িত্বে ছিল ভারতীয় সেনা। পরে কূটনৈতিক স্তরেও ভারতকে সেনা সরাবার বার্তা দেয় মলদ্বীপ।
তবে বিরোধী দলগুলির বক্তব্য, যে, ভারতীয় সেনা কখনওই মলদ্বীপের নিরাপত্তার জন্য ‘বিপজ্জনক’ হতে পারতেন না। উল্টে দূরবর্তী দ্বীপগুলিতে ওষুধ ও ত্রাণ পাঠানোর কাজে আসেন। ভারতের ক্ষেত্রে সার্বভৌমত্বের যুক্তি খাড়া করলেও মুইজ্জুর প্রশাসন কিন্তু সম্প্রতি সে দেশে চিনের একটি জাহাজকে নজরদারি করার ছারপত্র দিয়েছে। সূত্রের খবর, কলম্বো বিমানবন্দরকে পোতাশ্রয় হিসাবে ব্যবহার করতে না-পেরে মলদ্বীপের কোনও বন্দরে সেটির অবস্থান হবে। এই আবহেই মলদ্বীপ সরকারের ‘ভারত-বিরোধী’ সিদ্ধান্তের নেপথ্যে চিনের হাত দেখছেন অনেকেই। এই কারনকে কেন্দ্র করেই অনেকের মনে মালদ্বীপের এই নির্দেশের পিছনে চিনের হাত থাকার কথা ঘর করেছে। ইভিএম নিউজ