ইভিএম নিউজ ব্যুরো, ৪ এপ্রিলঃ (Latest News) মমতা যা কোনদিন ভাবতেও পারেনি তা করে দেখালেন নবীন পট্টনায়েক (Naveen Patnaik)। সমস্ত চুক্তি ভিত্তিক (contractual) কর্মীকে স্থায়ী চাকরি দিতে চলেছে ওড়িশা সরকার।ইদানিং সময়ে কলকাতায় জল সরবরাহের জন্য উড়িয়া ‘ভারী’দের কি দেখতে পান? ক’জন উড়িয়া রান্নার ঠাকুরকে দেখতে পান ? এমনকি দেখা যায়না কালাহান্ডিদেরও। কিন্তু তাঁরা কোথায় রয়েছেন? -তাঁরা রয়েছেন ওড়িশাতেই। কারণ বর্তমানে তাঁদের কর্মস্থল নিজ রাজ্যেই।
রুটিরুজির তাগিদে ভিন রাজ্যে বা বিদেশে গিয়ে কাজ করেন বাংলার বহু শ্রমিক। এমনকি পরিযায়ী শ্রমিক সংক্রান্ত কোন তথ্য রাজ্যের কাছে নেই। কিন্তু ওড়িশা সরকার তাঁদের ৫৭ হাজার অস্থায়ী সরকারি কর্মচারীকে স্থায়ী চাকরি করে দিয়েছে। আমাদের পশ্চিমবঙ্গ সরকার যেখানে তাঁদের সরকারি কর্মচারীদের কেন্দ্রীয় হারে মহার্ঘ ভাতা তো দূর বকেয়া ডিএ মেটাতে ব্যর্থ সেখানে ওড়িশা সরকার তাঁদের অস্থায়ী কর্মীদের স্থায়ী করলেন কিভাবে? উত্তর রাজস্ব বাড়িয়ে।
আম্ফানের সময় পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী যেখানে প্রধানমন্ত্রীর কাছে এক লক্ষ কোটি টাকার ক্ষতিপূরণ চেয়েছিলেন সেখানে ওড়িশা সরকারের (Government of Odisha) মুখ্যমন্ত্রী নবীন পট্টনায়েক প্রধানমন্ত্রীকে বলেছিলেন, তাঁর সাহায্যের প্রয়োজন নেই। তিনি বলেছিলেন, কেন্দ্র বিনা পয়সায় ১৩০ কোটি মানুষকে ভ্যাকসিন দিচ্ছে। অনেক খরচ। রাজ্যের
এই বিপর্যয় তিনি নিজেই সামলে নিতে পারবেন। কিন্তু কিভাবে?
নবীনের শাসনকালে ওড়িশাতে তিনি যেমন ক্ষুদ্র-মাঝারি মিলিয়ে ১৪ টি বন্দর ও ২৪ টি বিমান বন্দর তিনি তৈরি করেছেন পাশাপাশি ১১ টি শিল্প করিডোর, অধিকাংশ রাস্তা চার থেকে ছয় লেন বিশিষ্ট করা, শিল্পের জন্য সস্তায় বিদ্যুৎ সরবরাহ, স্বচ্ছ জমি নীতি তৈরি করা তাঁর অন্যতম উল্লেখযোগ্য কৃতিত্ব। এই সব কাজের জন্য অবশ্য ওড়িশার অর্থমন্ত্রীকে পশ্চিমবঙ্গের অর্থমন্ত্রীর মতো আমেরিকা থেকে পিএইচডি করতে হয়নি।
ব্যাপক কর্মসংস্থান তৈরি করলেও ওড়িশার মুখ্যমন্ত্রী ১০০ দিনের কাজে নিজেদের এক নম্বর বলে দাবি করেন না কিংবা ৯০% মানুষকে কেন্দ্রের দেওয়া ভর্তুকিযুক্ত চাল অর্থাৎ রেশন থেকে পাওয়া ২ টাকা কেজি দরের চাল পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রীর মতো নিজে দিচ্ছি বলে মিথ্যে বলে না। ওড়িশা স্কচ পুরস্কার পায়নি কিংবা কন্যাশ্রীর মতো কোন আন্তর্জাতিক পুরস্কারও পায়নি। ওড়িশার দুই কোটি মা-বোনকেও লক্ষীর ভান্ডারের টাকা দিতে হয়নি তাঁকে। মমতার মতো ১০০ দিনের কাজকে চাকরি বলে চালিয়ে ৪০% বেকারত্ব কমানোর মতো মিথ্যে পরিসংখ্যান প্রকাশ করতে হয়নি নবীন বাবুকে। কেন্দ্রীয় প্রতিনিধিদের অডিট করতে না দেবার কথা তো ভাবতেই পারেন না নবীনবাবু। সত্য তথ্যকে সামনে এনে সর্বদাই নিজের স্বচ্ছ ভাবমূর্তি বজায় রেখেছেন তিনি। প্রয়োজন অনুযায়ী পরিকল্পনা এবং তার বাস্তব রুপায়নে জোর দিয়েছেন হামেশাই।
হিন্দি ভাষীদের গুটখাখোর তকমা দিয়ে অকারনে বিভেদ তৈরি তো করেনই না বরং ভিন রাজ্য থেকে আগতদের যেন কোন অসুবিধা না হয় সেদিকে সর্বদা সজাগ থাকেন তিনি।ওড়িশার রথযাত্রা সম্ভবত কোন কালচারাল হেরিটেজ স্বীকৃতি পায়নি। আর পেলেও উনি সেটা নিয়ে উৎসব করে জনগনের ট্যাক্সের টাকা নষ্ট করেননি বা করতেনও না। রাজ্যের কোন ক্লাবকে বছরে দু’লক্ষ টাকা করে অনুদান ওনাকে দিতে হয় না। তবুও নবীনবাবু সমস্ত অস্থায়ী সরকারি কর্মীকে স্থায়ী করতে পারেন। আর পশ্চিমবঙ্গের অবস্থা?
সুধিজন আপনারা চিন্তা করুন। ভাবুন! ভাবুন! স্বাধীন ভাবে নিরপেক্ষ হয়ে চিন্তা করুন। আপনি যদি বুদ্ধিমান হন তবে সঠিক উত্তর পেয়ে যাবেন। আর যদি বেতনভোগী বুদ্ধিজীবী হন তবে অবশ্য অন্য কথা। তবে নিজ স্বার্থে নয় বরং বৃহত্তর স্বার্থে এই বিষয়ে ভেবে সর্বোপরি সিদ্ধান্ত নেওয়ার সময় এসেছে। (EVM News)