ইভিএম নিউজ ব্যুরোঃ শিশু বৃদ্ধ আর রোগীর জন্য অত্যন্ত দুধ একটি অন্যতম জীবনদায়ী পথ্য। অথচ, এহেন দুধ নিয়েই লড়াই শুরু হয়েছে, সরকারি আর বেসরকারি সংরক্ষণকেন্দ্র তথা কোল্ড স্টোরেজের লড়াই। আর সেই লড়াইয়ে সরকারি সংরক্ষণ কেন্দ্র থেকে মুখ ফেরালেন, পূর্ব বর্ধমানের কাটোয়ার দুধ উৎপাদকদের একটা বড় অংশ। বেসরকারি দুধ সংরক্ষণ ও শীতলীকরণ কেন্দ্রগুলি যে মূল্য দিচ্ছে, সরকারিকেন্দ্রগুলি তার থেকে অনেক কম দাম দিচ্ছে। এর ফলে স্থানীয় গোয়ালাদের আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হতে হচ্ছে বলে অভিযোগ জানিয়েছে, বর্ধমান কো-অপারেটিভ মিল্ক প্রোডিউসার ইউনিয়ন। আর এই অভিযোগে ইদানিং সরকারি সংরক্ষণ কেন্দ্রগুলিকে দুধ বিক্রি করতে চাইছেন না, বর্ধমানের কাটোয়া আর মঙ্গলকোটের গোয়ালারা।
উল্লেখ্য, কাটোয়া বাসস্ট্যান্ডে দুধ সংরক্ষণ ও শীতলীকরণ কেন্দ্র তৈরি হয় ১৯৯০ সালে। এই সংস্থার লক্ষ্য ছিল, এলাকার প্রত্যন্ত গ্রামে কয়েকটি সমিতি তৈরি করে সরকারের ধার্য করা মূল্যে দুধ কিনবে কয়েকটি সংস্থা। সরকারি কোল্ড স্টোরেজে সংরক্ষিত সেই দুধ এরপর পাঠানো হবে মাদার ডেয়ারিতে। সেই পরিকল্পনা অনুযায়ী কাটোয়ার বিভিন্ন গ্রামের গোয়ালাদের কাছ থেকে দুধ কিনে আসছিল এই সংস্থা। তবে, মঙ্গলকোট ব্লকে সরকার নির্ধারিত মূল্য কম দেওয়ার অভিযোগ তুলেছে দুধ গোয়ালারা। অন্যদিকে এই দুই ব্লকের বেসরকারি সংরক্ষণকেন্দ্রগুলি তুলনায় বেশি দাম দিয়ে চাষিদের কাছে দুধ কেনে। ফলে, সরকারি সংস্থাকে এখন কাটোয়া আর কেতুগ্রামের গোয়ালারা দুধ বিক্রি করতে চাইছেন না। এর জেরে তাই স্বাভাবিকভাবেই ক্ষতির মুখে পড়েছে কাটোয়ার দুধ সংরক্ষণ ও শীতলীকরণ কেন্দ্র।
এই নিয়ে জেলার বর্ষীয়ান বিধায়ক তথা রাজ্যের মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ যুক্তি, “বাম জমানার তুলনায় এখন অনেক বেশী দুধ উৎপাদন করেন গোয়ালারা”। মন্ত্রীর আরও দাবি, “বর্তমানে এখানকার ৩০০-র বেশী গোয়ালার কাছ থেকে ভর্তুকি সহ ৩৬ টাকা ৫০ পয়সা দরে প্রতি লিটার দুধ কেনে সরকারি সংস্থাগুলি। যদিও বেসরকারি বিভিন্ন সংস্থা যে এর চেয়ে বেশি দামে দুধ কিনছে, সেটাও সত্যি। আমাদের তরফ থেকেও গোয়ালাদের সরকারি কেন্দ্রে দুধ বিক্রিতে উৎসাহ বাড়ানোর জন্য নানা উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে”। যদিও অসম এই দামের ফারাক মেনে, মন্ত্রীর দাবি অনুযায়ী সরকারি সংরক্ষণ কেন্দ্রে গোয়ালারা দুধ বিক্রি করতে সেই “উৎসাহ” পাবেন কিনা, সেটা এখনও বোঝা যাচ্ছে না।