পন্যের

প্রবীর বন্দ্যোপাধ্যায়, ২৬ ডিসেম্বর: বাড়ছে নিত্য পন্যের দাম, বাড়ছে রাজনীতির কাজিয়া

করোনার পর থেকেই দেশজুড়ে বেড়েই চলেছে নিত্য পন্যের দাম। আর সেই সঙ্গে বেড়েছে পন্য সরবরাহকারী যানবাহনের পেট্রোপন্যের মূল্য। কিন্তু হায়! কে আর সে দিকে তাকায়, দেশ ও রাজ্যের শাসকবর্গ সেদিকে নজরই দিতে চাননা। এমনকি কেন্দ্রীয় সরকার যাদের হাতে পেট্রোপন্যের নিয়িন্ত্রন তারাও দিব্যি উদাসীন। ঠিক একইভাবে রাজ্যের সরকারগুলিও সাধারণ মানুষের দুরবস্থার দিকে তাকাতে যেনও ২ বার ভাবছেন। ভাব খানা এমন, যে বিনা পয়সার রেশনে চাল যখন মিলছে, তখন আর চিন্তা কি? পশ্চিমবঙ্গে সেই সনহে ৫০০ ও হাজার টাকা লক্ষ্মীভাণ্ডার নাকি সমস্যার সমসধান করে দিয়েছে। কি আপদ! যদি কেউ এ ব্যপারে প্রকাশ্যে মুখ খোলেন, আর সরকার পক্ষ শুনে ফেলে তবে আর নিস্তার নেই। শরৎচন্দ্রের ‘মেজদা’ হয়তো শাসক পক্ষের কোনও কর্তা বলবেন, ‘উহার লেজ কাতয়া লও’। ব্যাচারা সাধারণ জনগন, কি আর করে। কিল খেয়ে পীঠ বেজায় ব্যাথা। তবুও সে কিল তারা হজম করছে। বিশেষত বাঙ্গালী এখন আজ অদ্ভুত প্রজাতি। নিজেদের বাংলা ভাষা ভুলতে বসেছে। বাংলা  সংস্কৃতি লাটে। বাংলা যাত্রা- থিয়েটার- নাটকের সে রমরমাও নেই। কিন্তু তাতে কি? তৃণমূল তো আছে। বিজেপি আছে। তাদের ২ চক্ষু শূল কংগ্রেস এবং বামেরাও আছে। সরকার পক্ষ আর বিজেপি এই ২ চক্ষু শূলকে একই বাণে ঘায়েল করছে। বলছে, তোমরা এতো বলো কেন? বিধানসভায়তো বাম- কংগ্রেস শূন্য। তবু গলাবাজি?  তৃণমূল বলছে উন্নয়ন কাকে বলে দেখেছেন? বাইরে বেরলে দেখবেন উন্নয়ন লাঠি হাতে দাড়িয়ে আছে। বীরভূমের ‘শ্রী কৃষ্ণ’ থুড়ি কেষ্ট মণ্ডল অরফে অনুব্রত চড়াম চড়াম  ঢাক বাজিয়ে ক্লান্ত হয়ে স-কন্যা তিহার জেলে বিশ্রাম নিচ্ছেন। আর নকুলদানা খাওয়ানোর সুযোগ পাচ্ছেন না। ‘পুলিশকে বোম মারো’ বলে তিনি যে তাঁর প্রিয় নেত্রী মুখ্যমন্ত্রী তথা রাজ্যের স্বরাষ্ট্র পুলিশমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ওপর যে অনাস্থা দেখিয়েছিলেন সে জ্ঞান-গম্মো বীরভূমের নেতাজী মনে করা কেষ্টর ছিল না। হাইকোর্টে হইচই, জজ সাহাবের ঘরে তার ‘মহান’ বক্তব্যের সিডি দেখানো যে কতটা মর্যাদা বাড়িয়েছিল তার দলের সে ব্যপারে দলের কোনও কেষ্ট- বিষ্টুরই মুখ খোলার সাহস ছিল না। কারণ, ওইযে, তিনি মমতার বড় প্রিয়। তাই ে সব করতেই কেটে গেল কয়েক বছর। মূল্যবৃদ্ধি দেখার ও তার প্রতিবাদের সময় কোথায়? দিল্লীর বাবুদের বিরুদ্ধে কোমর বেঁধে ময়দানে নামা অথবা সংসদে বিজেপির বিরুদ্ধে ভোট দেওয়ার প্রয়োজন মনে করেনি তৃণমূল। দীর্ঘদিন রাজ্যবাসী ১২০ টাকা কেজির ডাল খেয়েছে। সরষের তেল ছারিয়েছিল ২০০ টাকা প্রতি কেজি। আর কেরোসিন সে ২০ টাকা লিটার থেকে এমন মহার্ঘ হলো, যে আজ তা প্রায় অদৃশ্য। দেশের গরীব মানুষ হ্যারিকেন জ্বালাতে ভয় পায়। সামান্য কেরোসিন দরকার হলেও তা আর মেলেনা। সেও নাকি এখন ৮০ টাকা লিটার।

BT Road-এর ভোল বদলাতে খরচ ৮৮ লক্ষ! কেমন হবে নয়া রোড?

এ রাজ্যে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে  রাজস্ব ও ভূমিকর। সাধারণ মানুষের  নাভিশ্বাস ওঠার জোগাড়। এ রাজ্যে উৎপাদিত আলুর দাম কেন সারাবছর সরকার নিয়ন্ত্রণ করল না তা অজ্ঞাতি থেকে গেল। সাবসিডি মার্কা আলু ও এই রাজ্যে উৎপাদিত পন্য সেভাবে গ্রাম -গ্রামান্তরে পৌঁছানোর ব্যবস্থা হলো না। মাঝেমধ্যে প্রাকৃতিক দুর্যোগ হলে সারা বছরই ওই প্রকৃতি বেচারাকেই হাড়িকাঠে বলি দেওয়া হচ্ছে। প্রকৃতিই তখন ছাই ফেলতে ভাঙা কুলো। তার ঘাড়ে পা রেখেই ‘মহান’ রাজনৈতিক নেতারা বৈতরণী পার হতে চাইছেন। সারা দেশের সঙ্গে এ রাজ্যেরও গ্রাম-গঞ্জের মানুষ সরকারের সব খবর খুঁটিনাটি পায়না। করিৎকর্মা রাজনীতির কেষ্ট-বিষ্টুরা গ্রাম- গঞ্জে যে ভাষণ দিয়ে আসেন তার অনেকটাই যে নির্ভেজাল মিথ্যা সে আর বোঝে কয় জন? ওই যে ‘ দিল্লীর বাবুরা ক্ষমতায় আসার আগে বলে ছিলেন বছরে ২ কোটি বেকারের চাকরি দেবেন’। ফলে তাদের ১০ বছরে ২০ কোটির চাকরি হওয়ার কোথা ছিল। তা হলে তো সকাল ৮ তায় সকল যুবক- যুবতীকেই দেখা যেত ট্রেন- বাস ধরে অফিস ছুটছে। কিন্তু না। তারা বড় বড় বোঝা ঘাড়ে পরিযায়ী শ্রমিক হয়ে ভিন রাজ্যে রোজ পাড়ি দিচ্ছেন। কখনও তাদের অনেকেই সেতু ভেঙে পড়ে যাচ্ছেন। কফিনবন্দী  দেহ আসছে বাড়িতে। কখনও সুরঙ্গে আটকে কোনওক্রমে বেঁচে ফিরছেন। কিন্তু আবার সেই পরিযায়ী শ্রমিকের কাজেই ফিরে যাচ্ছে। কারণ, পেট বড় বালাই। একথা ঠিক, যে এই বিপুল জনসংখ্যার দেশে সকলকে সরকারি চাকরি দেওয়া সম্ভব নয়। তবে, সরকারী -বেসরকারি মিলিয়ে কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকার বহু বেকারকেই সঠিক উপায়ে চাকরি দিতে পারতেন।  কিন্তু স্বদিচ্ছার অভাব এখানে বড় অন্তরায়। কেন্দ্রীয় সরকার শুধু হুঙ্কার দিয়ে গেলেন অন্যায়ের বিচার হবে এই মোদী ‘কিসিকো ছোরেঙ্গে নেহি’। কিন্তু এসবই বাগাড়ম্বর। রাজ্যে বছরের পর বছর রাস্তায় গড়াগড়ি খাচ্ছে স্কুলে চাকরীর পরীক্ষায় পাশ করা ছেলে- মেয়েরা। কিন্তু, মোদী অথবা দিদি যেনও একই সুরে বলছেন সেই ফরাসী বিপ্লবের আগে ম্যারি আতোয়ানেতের কথা- ‘রুটি খেতে না পেলে কেক খাও’। ইভিএম নিউজ

বিশ্ব জুড়ে

গুরুত্বপূর্ণ খবর

বিশ্ব জুড়ে

গুরুত্বপূর্ণ খবর