ইভিএম নিউজ ব্যুরোঃ পঞ্চায়েত ভোটের আগে গোষ্ঠীকোন্দলে জেরবার তৃণমূল কংগ্রেসের দক্ষিণ পরগনা জেলার নেতৃত্ব। তার মধ্যেই মাঝখানেক আগে ভাঙরের হাতিশালায় পতাকা উত্তোলনকে কেন্দ্র করে ধুন্ধুমার বেঁধে গিয়েছিল, আরাবুল ইসলাম আর আইএসএফ বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকির গোষ্ঠীর মধ্যে। সেই উত্তপ্ত রাজনীতির ঢেউ আছড়ে পড়েছিল কলকাতার প্রাণকেন্দ্রে। পুলিশকে কাজে লাগিয়ে একতরফা নওসাদ সিদ্দিকি সহ আইএসএফ নেতাকর্মীদের গ্রেফতারের অভিযোগ উঠেছিল রাজ্যের শাসকদল তথা সরকারের বিরুদ্ধে। ঘটনায় নিউমার্কেট আর লেদার কমপ্লেক্স থানাতে নওশাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের হয়েছিল।
আইএসএফ সহ বিরোধীদের অভিযোগ ছিল, গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব ঠেকিয়ে দক্ষিণ ২৪ পরগণায় শাসকদলের সংখ্যালঘু ভোটব্যাঙ্ক ধরে রাখতে, নওসাদ সিদ্দিকিদের হেফাজতে রাখা মরিয়া চেষ্টা করবে রাজ্যের শাসকদল। এই পরিস্থিতিতে প্রথমে লালবাজার ও তারপর লেদার কমপ্লেক্স থানার মামলার ভিত্তিতে টানা নওশাদকে জেল হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছে আদালত। উদ্ভূত এই পরিস্থিতিতে আইএসএফ বিধায়ক রাজ্য বিধানসভার বাজেট অধিবেশনের আগে আদৌ জামিন পাবেন কিনা, তৈরি হয়েছিল জল্পনা। সেই জল্পনা বাস্তব হল, বৃহস্পতিবার ব্যাঙ্কশাল আদালতের নির্দেশের পর। এদিন নওসাদের জামিনের আবেদন খারিজ করে ফের জেল হেফাজতে পাঠানোয়, বৃহস্পতিবার থেকে শুরু হওয়া রাজ্য বিধানসভার বাজেট অধিবেশনে থাকার সুযোগ পেলেন না নওসাদ সিদ্দিকি।
তবে বৃহস্পতিবারের এই আদালতের নির্দেশের পাশাপাশি, অন্য একটি ঘটনাতেও দিনভর সরগরম রইল রাজ্যরাজনীতি। নওসাদের মুক্তির দাবিতে এদিন কার্যত বামেদের সুরে সুর মিলিয়েই, নজির বিহীনভাবে বিধানসভার গেটে বিক্ষোভ প্রদর্শন করলেন, রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। শুভেন্দুর নেতৃত্বে সেই বিক্ষোভে অংশ নিলেন অন্যান্য বিজেপি বিধায়করাও।
বৃহস্পতিবার সকালে নওসাদকে ব্যাঙ্কশাল কোর্টে পেশ করা হলে জামিনের আবেদন জানান তাঁর আইনজীবী৷ কিন্তু সরকারি আইনজীবীর বক্তব্য, “যিনি বিধায়ক, যাঁরা আইন রচনা দায়িত্বে, তাঁরা আইন ভাঙেন কীকরে? সিডি-তে দেখেছি, জমায়েতের কোনও অনুমতি ছিল না। এটা বেআইনি জমায়েত।” নওসাদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে কত টাকা আছে, তা পরীক্ষা করে দেখার জন্যও নওসাদের জামিনের বিরোধিতা করেন সরকারি আইনজীবী৷ পাল্টা যুক্তি দিতে গিয়ে নওসাদের আইনজীবী আদালতে প্রশ্ন তোলেন, নওসাদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে কত টাকা রয়েছে, তা দেখতে তাঁকে কেন হেফাজতে রাখতে হবে?
দুই পক্ষের সওয়াল জবাব শুনে জামিন খারিজ করা হয়৷ আগামী ১৫ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত আইএসএফ বিধায়কে জেল হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে আদালতের তরফে৷