ইভিএম নিউজ ব্যুরো, ৯ মার্চঃ দোল হিন্দু সভ্যতার অন্যতম প্রাচীন উৎসব। নারদ পুরাণ, ভবিষ্য পুরাণ ও ‘জৈমিনি মীমাংশা’য় রঙ উৎসবের বিবরণ পাওয়া যায় । ৩০০ খৃষ্টপূর্বাব্দের এক শিলালিপিতে রাজা হর্ষবর্ধন কর্তৃক ‘হোলিকোৎসব’পালনের উল্লেখ পাওয়া যায় । হর্ষবর্ধনের নাটক ‘রত্নাবলী’তেও হোলিকোৎসবের উল্লেখ আছে। মধ্যযুগের বিখ্যাত চিত্রশিল্পগুলির অন্যতম প্রধান বিষয় রাধা-কৃষ্ণের রঙ উৎসব ।
বৈষ্ণব বিশ্বাস অনুযায়ী, ফাল্গুনী পূর্ণিমা বা দোলপূর্ণিমার দিন বৃন্দাবনে শ্রীকৃষ্ণ আবির বা গুলাল নিয়ে রাধিকা ও অন্যান্য গোপীগণের সঙ্গে রং খেলায় মেতেছিলেন। সেই ঘটনা থেকেই দোল খেলার উৎপত্তি হয়। দোলযাত্রার দিন সকালে তাই রাধা ও কৃষ্ণের বিগ্রহ আবির ও গুলালে স্নাত করে দোলায় চড়িয়ে কীর্তনগান সহকারে শোভাযাত্রায় বের করা হয়। এরপর ভক্তেরা আবির ও গুলাল নিয়ে পরস্পর রং খেলেন। দোল উৎসবের অনুষঙ্গে ফাল্গুনী পূর্ণিমাকে দোলপূর্ণিমা বলা হয়। আবার এই পূর্ণিমা তিথিতেই চৈতন্য মহাপ্রভুর জন্ম বলে একে গৌরপূর্ণিমা নামেও অভিহিত করা হয়। দোলযাত্রা উৎসব শান্তিনিকেতনে বসন্তোৎসব নামে পরিচিত। ফাল্গুনী পূর্ণিমা অর্থাৎ দোলপূর্ণিমার দিনই শান্তিনিকেতনে বসন্তোৎসবের আয়োজন করা হয়।
বসন্ত উৎসবে এক টুকরো শান্তিনিকেতন যেন উঠে এল নদী, টিলা, গাছ- গাছালি ঘেরা প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরপুর মুকুটমণিপুরে। রাজ্যের অন্যতম পর্যটন কেন্দ্র বাঁকুড়ার রাণী মুকুটমণিপুরে মঙ্গলবার সকালে অনুষ্ঠিত হল পলাশ উৎসব। বিগত বছর গুলোর ন্যায় সুন্দরী মুকুটমণিপুরের পলাশ উৎসবে এদিন পলাশে- আবীরে রঙিন হয়ে উঠে। অনুষ্ঠানের সূচনা করেন রাজ্যের মন্ত্রী জ্যোৎস্না মান্ডি। জ্যোৎস্না দেবী এদিনের রঙিন অনুষ্ঠানে নৃত্য পরিবেশনও করেন। মন্ত্রী ছাড়াও এদিনের পলাশ উৎসবে উপস্থিত ছিলেন বাঁকুড়ার জেলাশাসক কে রাধিকা আইয়ার, খাতড়ার মহকুমা শাসক নেহা বন্দ্যোপাধ্যায়,খাতড়া মহকুমা পুলিশ আধিকারিক কাশীনাথ মিস্ত্রি সহ স্থানীয় প্রশাসনের কর্তারা। মুকুটমণিপুর উন্নয়ন পর্ষদের উদ্যোগে খাতড়া মহকুমা প্রশাসনের সহযোগিতা বসন্তের নাচে- গানে মাতেন এলাকার শিল্পীরা। উৎসব ঘিরে প্রচুর মানুষ উপস্থিত হয়েছিলেন, পর্যটকদের বাড়তি পাওনা হল এদিনের এই পলাশ উৎসব।একে অপরকে রাঙিয়ে তুলেন উপস্থিত সকলেই।