কি

ব্যুরো নিউজ, ২২ ডিসেম্বর: পুলিশ আইন কি বদলাবে?

সারা দেশের নিরাপত্তার স্বার্থে এবার পুলিশ আইনের পরিবর্তন প্রয়োজন। এমনই মনে করছেন কেন্দ্রীয় সরকারের পদস্থ ব্যক্তি থেকে প্রাক্তন পুলিশ কর্তারাও। পরাধীন ভারতে দেশে প্রথম পুলিশ আইন প্রবর্তন হয় ১৮৬১ সালে ১৯৪৭ সালে দেশ স্বাধীন হওয়ার পর বারবার এই পুলিশি আইন সংশোধনের পক্ষে একাধিক রিপোর্ট জমা পরেছিল। ১৯৭৭ সালে যখন জাতীয় পুলিশ কমিশন তৈরি হয়। সেখানেও মান্ধাতা আমলের সেই পুলিশি আইন বদলের সুপারিশও করা হয়। তাই এবার পুলিশ কর্তারা ও কেন্দ্রীয় সরকার মনে করছেন সারা দেশের নিরাপত্তা এবং ভারতবিরোধী আন্তর্জাতিকস্তরের বিভিন্ন ষড়যন্ত্র ও সন্ত্রাসবাদীদের ঠেকাতে পুলিশি আইনের বদল দরকার। কারণ, ভরতের একাধিক রাজ্যের সঙ্গে রয়েছে আন্তর্জাতিক সীমানা। যেমন- গুজরাত ও কাশ্মীরের সঙ্গে রয়েছে পাকিস্তানের আন্তর্জাতিক সীমানা। পশ্চিম্বঙ্গের সঙ্গে জল ও স্থলপথে রয়েছে বাংলাদেশ সিমান্ত। রক্সৌল হয়ে নেপাল যাওয়া সহজ। পশ্চিমবঙ্গের সঙ্গে ভুটান সিমান্ত গুরুত্বপূর্ণ। বর্তমানে শুধু যে কাশ্মিরে পাক সন্ত্রাসবাদী হানা হচ্ছে এমন নয়, ভারত লাগোয়া দেশগুলি থেকে বিভিন্নভাবে বেআইনি আচার- পাচার এবং অনুপ্রবেশ ঘটেই চলেছে। এই সমস্যা বহু দিনের। বিষয়টি নিয়ে ইতিমধ্যেই ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভাল মার্কিনযুক্তরাষ্ট্রের নিরাপত্তা উপদেষ্টা জ্যাক সুলিভানের সঙ্গে আলোচনা সেরেছে। ভারতের নানা অঙ্গরাজ্যে হানাদারেরা ঢুকে সুস্থিতি নষ্ট করার চেষ্টা বহু দিন ধরেই করে আসছে। আর সে কারনেই সিমান্ত লাগোয়া ভারতের রাজ্যগুলিতে সন্ত্রাসবাদী হানায় প্রাণ গিয়েছে বহু নিরীহ ভারতবাসীর সঙ্গে ভারতীয় সেনা ও সেনা কর্তাদের।

দেবের গলায় বিদায়ের সুর

পাকিস্তান, নেপাল, শ্রীলঙ্কার আর্থিক পরিস্থিতি বেহাল হয়ে পরলেও ভারতকে নানাভাবে বিব্রত করা প্রায় সব সীমান্তবর্তী দেশগুলিরই দস্তুর হয়ে দাঁড়িয়েছে। ফলে ১৯৯৮-৯৯ সালে রিবেইরো কমিটি ১৮৬১ সালে পুলিশি আইনের সংস্কারের সুপারিশ করে। তার ঠিক আগেই ভারতের সুপ্রিমকোর্ট ওই সুপারিশ বাস্তবে রুপ দেওয়ার জন্য নির্দেশ দেয়। কিন্তু সেসেব নির্দেশ প্রায় ২ যুগ পেড়িয়ে গেলেও কার্যকর হয়নি। সেই উপলব্ধি থেকেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী রাজ্যগুলির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীদের বৈঠকে এক দেশ, এক পুলিশ উর্দি তৈরির প্রস্তাব দেন। ইতিমধ্যেই কেন্দ্রের বিজেপি সরকার ২১ ডিসেম্বর ২০২৩ তারিখে সংশোধন এনেছেন ব্রিটিশ আমলের সিআরপিসি ও  আইপিসি ও ভারতীয় সাক্ষ্য আইনের। নতুন আইনের নাম দেওয়া হয়েছে  ভারতীয় সংহিতা ২০২৩, ভারতীয় নাগরিক সুরক্ষা সংহিতা, ভারতীয় সাক্ষ্য বিল। সংসদের উভয় কক্ষেই ভারতীয় জনতাপার্টি নিজেদের সাংসদ সংখ্যার জোরে বিরোধী শূন্য কক্ষে তা পাশ করিয়ে নিয়েছে। তাদের যুক্তি ছিল, বর্তমানে পরিবর্তিত রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে নয়া আইন জরুরী, না হলে ভবিষ্যতে ঠেকানো যাবে না সন্ত্রাসবাদীদের। বিপন্ন হতে পারে ভারতের অখণ্ডতাও। বিশেষত পাক গুপ্তচর সংস্থা আইএসআই সারা বছরই সেই ছক কষে চলেছে।

ভারতীয় সংবিধানের সপ্তম তপশীলে দেশের পুলিশি ব্যবস্থা ৩ ভাগে করা হয়েছে। প্রথম ভাগটি হল কেন্দ্রীয় সরকারের। দ্বিতীয় ভাগটি হল রাজ্য পুলিশ ও জিআরপি, যা রাজ্য সরকারের অধীন। তৃতীয় যুগ্ম তালিকায় রয়েছে পুলিশের উর্দির ধরন, সংগঠন ও পুলিশের কাজের ব্যখ্যা। প্রথম ভাগএ কেন্দ্র সরকারের অধিনে রয়েছে সিআরপিএফ, সিআইএসআফ, আরপিএফ ও আইটিবিপি। রাজ্যের তালিকায় রয়েছে রাজ্য পুলিশ ও জিআরপি। পুলিশ আইনের বলের আরও একটি কারণ হল, মান্ধাতা আমলের ওই আইন অনুসারে পুলিশ বেআইনিভেবে গ্রেফতার করে, নিরীহদের নানভাবে অত্যাচার, মহিলাদের নির্যাতন করে এমনকি হেফাজতে মৃত্যুর ঘটনাও আকছার ঘটে চলেছে। দেশের বিভিন্ন রাজ্যের হাইকোর্টগুলিও পুলিশের অতি সক্রিয়তা, দাদাগিরি ও কিছু ক্ষেত্রে দুর্নীতির কড়া সমালোচনা করেছে। বিভিন্ন রাজ্যেই পুলিশ ক্ষমতাসীন দলের ক্যাডারদের মতো কাজ করে। এর কারণ নাকি কিছুটা বিভিন্ন রাজ্যের পুলিশের বিভিন্ন পোশাক। থানা গুলিও অভিযোগ নিতে চায় না। হাসপাতালের চিকিৎসকদের রেফার রোগের মতো তারাও ডায়েরি না নিয়ে অন্য থানায় পাঠিয়ে দেয়। অনেকক্ষেত্রে গ্রেফতার করে থানায় রেকর্ড রাখা হয় না। সাধারণ মানুষের সেবার ব্রত বা দায়িত্ব পুলিশ এখন ভুলে গেছে, সেই সঙ্গে রয়েছে বেআইনি ভাবে টাকা রোজগার। এব্যপারে সবচেয়ে করিৎকর্মা ট্রাফিক পুলিশ। পুলিশের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার অভিযোগও কম নেই। তাই এ সবের থেকে রেহাই পেতে এবার পুলিশি আইনের বদল জরুরী। ইভিএম নিউজ

বিশ্ব জুড়ে

গুরুত্বপূর্ণ খবর

বিশ্ব জুড়ে

গুরুত্বপূর্ণ খবর