সামু দাস, আলিপুরদুয়ারঃ একসময় KLO-র সঙ্গে যুক্ত থাকলেও তারা এখন পুলিশ কর্মী। ২০০৮ সালের অপারেশন ফ্ল্যাশ আউটের পর মূল স্রোতে ফিরতে আত্মসমর্পণ করেছিলেন KLO-র একাংশ সদস্যরা। এরপরে বেশকিছু KLO-র সদস্যদের রাজ্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে হোমগার্ডের দায়িত্ব দেয়া হয়। তখন থেকেই তারা রাজ্য তথা দেশের স্বার্থে একাধিক কার্যকলাপের সঙ্গে যুক্ত। এর আগে প্রজাতন্ত্র দিবসে আলিপুরদুয়ার প্যারেড গ্রাউন্ডের মার্চ পাস্ট গুটিকয়েক KLO-র কর্মীরা যুক্ত থাকলেও, এবছর তারা আলিপুরদুয়ার জেলা প্রশাসনের ৭৪ তম প্রজাতন্ত্র দিবস উদযাপনের মার্চ পাস্ট গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করতে চলেছেন। জানা গেছে এবছর তাঁরা অন্যান্য দায়িত্ব সামলানোর পর প্রথম আলিপুরদুয়ার জেলা প্রশাসনের প্রজাতন্ত্র দিবস উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে মার্চ পাস্ট ব্যান্ডের দায়িত্ব সামলাচ্ছেন। শিলিগুড়িতে আর এ এফ ব্যাটেলিয়নে কয়েক মাস ব্যান্ডের প্রশিক্ষণ নেওয়ার পর প্রজাতন্ত্র দিবস উপলক্ষে আরও চার মাস বারতি অনুশীলন চলে তাদের। এবছর তারাই সামলাবেন পুলিশের ব্যান্ড, যে ব্যান্ডের নির্দেশে পরিচালিত হতে চলেছে আলিপুরদুয়ার জেলা প্রশাসনের আয়োজিত ৭৪ তম বর্ষ প্রজাতন্ত্র দিবসের মার্চপাস্ট অনুষ্ঠান। শনিবার প্যারেড গ্রাউন্ডে অন্যান্য পুলিশ কর্মী , এন সি সি সহ স্কুল পড়ুয়াদের প্যারেডে ব্যান্ডের অনুশীলনে সেই সমস্ত KLO-র রিং ব্যান্ডের গুরু দায়িত্ব পালন করতে দেখা যায়। বিকেলে অনুশীলন শেষে তৃপ্তির হাসি দেখা গেল নিরঞ্জন দাস , হিতেন রায়, অমিত দাস , চক্রা দাসদের মতো সকলের মুখে।
তাঁদের একটাই কথা , নতুন জীবনকে নতুন ভাবে আনন্দ এবং সম্মানের সঙ্গে উপভোগ করছেন তার। স্ত্রী , সন্তানের সঙ্গে সুখে জীবন কাটাতে পারে অত্যন্ত খুশি তারা।
আলিপুরদুয়ার পুলিশ সুপার ওয়াই রঘুবংশী বলেন , আগে মহিলা পুলিশ কর্মীদের একটি দল ব্যান্ডের দায়িত্ব সামলাতো। একাধিক কর্মসূচি থাকায় তাদের দিয়ে সমস্ত অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করানোর সমস্যা হতো। তাই এবার হোম গার্ডদের নিয়ে দ্বিতীয় আরেকটি পুরুষদের পুলিশ ব্যান্ডের দল তৈরি করা হয়েছে। সেই দলের মধ্যে অধিকাংশ সংখ্যক KLO-র লিঙ্ক ম্যানরা রয়েছেন। তাঁরাই এবার প্রজাতন্ত্র দিবসে ব্যান্ডের দায়িত্ব সামলাবেন। সেই দলে বিভিন্ন জায়গার হোম গার্ডের কর্মী রয়েছেন।
১২ জন হোমগার্ড কর্মীদের নিয়ে সেই ব্যান্ড তৈরি করা হয়েছে। প্রজাতন্ত্র দিবসের জন্য ছয় মাস ধরে তাদের বিশেষ ভাবে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। ছয় মাসের বেশি সময় ধরে তারা অনুশীলন নিয়ে তারা নিজেদের দক্ষ প্রমাণ করে। এখন তাদের চূড়ান্ত পরীক্ষা ২৬ জানুয়ারী প্যারেড গ্রাউন্ডের ময়দানে।
যদিও ইতিপূর্বে মহিলা পুলিশের বিশেষ দল আলিপুরদুয়ার জেলায় পুলিশের ব্যান্ডের দায়িত্বে ছিলেন। অনেক সময় মহিলা কনস্টেবল সহ পুলিশ কর্মীদের অন্যান্য জরুরি কাজে প্রয়োজন পরে। ফলে তাদের ব্যান্ডের দায়িত্বে সামলে সে সব কাজের বাড়তি দায়িত্ব সামলানো কষ্টকর ছিল। তবে এই দ্বিতীয় ব্যান্ডের দল তৈরি হওয়ায় অনেক সুবিধা মিলবে বলেই পুলিশের দাবি।
পুলিশ কর্তাদের এই উদ্যোগের ঘটনায় আগের স্মৃতির কথা বার বার মনে করার কথা জানালেন তাঁরা। তবে তা এখন স্মৃতির পাতায় চাপা পরে গিয়েছে বলেই মনে করছেন তারা। পুলিশের কাজ করে সাধারণ মানুষ ও পরিবারের কাছে থাকতে পারাতেই তারা বেশি খুশি বলে জানালেন একসময় KLO-র সঙ্গে যুক্ত থাকা কর্মীরা।