ব্যুরো নিউজ, ১৪ নভেম্বর: জয়নগরে জোড়া খুন| পরিস্থিতি অগ্নিগর্ভ
বাড়ির কাছেই মসজিদ। আর সেই মসজিদে নামাজ পড়তে গিয়ে দুষ্কৃতীদের গুলিতে ঝাজরা হয়ে গিয়েছে তৃণমূলের অঞ্চল সভাপতি সাইফুদ্দিন লস্কর । এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে মুহূর্তের মধ্যেই রণক্ষেত্রের চেহারা নেয় জয়নগর। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বাইকে করে ৫ জন দুষ্কৃতী এসে তৃণমূল নেতা সাইফুদ্দিন লস্করকে গুলি করে। গুলির শব্দ শুনে ঘটনাস্থলে ছুটে আসে এলাকাবাসীরা। এরপর এলাকাবাসীদের হাতে এক দুষ্কৃতী ধরা পরে যায়। বাকি দুষ্কৃতীরা বেগতিক বুঝে এলাকা থেকে চম্পট দেয়। গ্রামবাসীদের হাতে ধরা পরা দুষ্কৃতিকে গণপিটুনিতে মেরে ফেলা হয়।
তৃণমূলের অঞ্চল সভাপতি খুনের অভিযোগে অভিযুক্তর গ্রামে আগুন
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে বারুইপুর পুলিশ জেলার পুলিশের পক্ষ থেকে বিশাল পুলিশ বাহিনী এলাকায় মোতায়েন করা হয়েছিলো। ইতিমধ্যেই এই খুনের অন্যতম অভিযুক্তকে গ্রেফতার করেছে বারুইপুরের পুলিশ। পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে অভিযুক্ত তার নিজের দোষ স্বীকার করে নেয়। এর কিছুক্ষণের মধ্যে বামুনগাছি গ্রাম উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। গ্রামের ২০-২৫ টি বাড়ি পরপর জ্বালিয়ে দেওয়া হয়। কার্যত দাউ দাউ করে জ্বলতে থাকে গোটা গ্রাম।
সকাল সাড়ে সাতটা থেকে শুরু হয়েছিল ধ্বংসলীলা। কিন্তু দমকল কর্মীদের গ্রামে ঢুকতেই দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ। যতদূর পর্যন্ত চোখ যাচ্ছে, ততদূর পর্যন্ত বাড়ি জ্বলছে। বাড়ির বাসিন্দারা চোখের সামনে সর্বস্ব পুড়তে দেখেছেন। আগুন নেভানোর কেউ ছিল না। বাইরে থেকে গ্রামে কেউ ঢুকতেই পারছিলো না। গ্রাম পুরুষশূন্য। তাই বালতি নিয়ে পুকুর থেকে জল তুলে সেই জলন্ত বাড়িতে ঢেলে আগুন নেভানোর চেষ্টা করছিলেন গ্রামের মহিলারা। আর শুধু মহিলা নয়, ছোট-ছোট শিশুরাও বালতি নিয়ে গিয়ে জল তুলে আগুন নেভানোর চেষ্টা করছিল। এলাকারই এক মহিলা বললেন, “আমাদের বাড়ি জ্বালিয়ে দিয়েছে তৃণমূলের লোকেরা। যেহেতু আমরা সিপিএম করি সেই কারণে আমাদের বাড়িঘর জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছে। যে খুন হয়েছে তাঁর সঙ্গে আমাদের গ্রামের কেউ জড়িত নয়। অথচ গ্রামে এসে বলছে সাইফুদ্দিনকে আর নয়, এই গ্রামের লোকেরাই খুন করেছে”। অর্থাৎ নিতান্তই সন্দেহর বশেই একের পর গ্রাম জ্বালিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠল তৃণমূলের বিরুদ্ধে।
গ্রামের আরও এক মহিলা বলেন, “আমরা খেটে খাওয়া মানুষ। কোনও রাজনীতি করি না। তারপরও আমাদের ঘরদোর পুড়িয়ে ছাই করে ফেলেছে। কোথায় থাকব এখন? একটা হাড়ি পর্যন্ত নেই খাবার রান্না করার”।
তৃণমূল নেতা শওকত মোল্লাও বলেন, “সিপিএম-বিজেপি আশ্রিত সমাজ বিরোধীরা সাইফুদ্দিনকে খুব কাছ থেকে গুলি করে খুন করেছে। এর একটাই কারণ যাতে দক্ষিণ ২৪ পরগনায় একটা সন্ত্রাসের বাতাবরণ তৈরি হয়। পুলিশকে বলব যত দ্রুত সম্ভব অভিযুক্তদের গ্রেফতার করা হোক”। অভিযোগ অস্বীকার করেছেন সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তী। তিনি বলেছেন, “কারোর ঘাড়ে দোষ না চাপিয়ে যত দ্রুত সম্ভব খুনিকে খুঁজে বের করা হোক। যথাযথ তদন্ত হোক”। ইভিএম নিউজ