সন্দীপ মুখার্জি,কে. পি অ্যাস্ট্রোলজার, ১ জুনঃ (Latest News) গণেশের জন্ম উৎপত্তি নিয়ে কে পি অ্যাস্ট্রোলজার সন্দীপ মুখার্জির বর্ণনা। জয় মা তারা। প্রথমেই শুভ সন্ধ্যা জানাই আমার সকল বন্ধুদের। সবাই আমার ভালোবাসা নিও।
মা তারার নাম নিয়ে আজ আমাদের সকলের প্রিয় গনেশজীর কিছু কাহিনী জানালাম আপনাদের, ভালোলাগলে অবশ্যই জানাবেন। গণেশের জন্ম উৎপত্তি নিয়ে বিভিন্ন মতামত আছে, বিভিন্ন পুরাণে অনেক কিছু বর্ণনা করা আছে , সেই গুলি একে একে বর্ণনা করলাম..।।
১. গণেশের জন্ম বৃত্তান্ত মতভেদ।
২. গণেশের বাহন মূসক ( ইদুর ) কেনো।
৩. গণেশের মুণ্ড ছেদে শনিদেবের ভূমিকা।
এই তিনটি কাহিনী বৃত্তান্ত একসাথে লেখা সম্ভব নয়। তাই আমি একটি একটি করে জানালাম আপনাদের।
গণেশের জন্ম বৃত্তান্ত মতভেদ
নিম্নলিখিত পুরাণগুলিতে জানানো হয়েছে বিভিন্ন মতামত
১. শিব পুরাণ
২. ব্রহ্মবৈবর্ত পুরাণ
৩. বামন পুরাণ
৪. দেবী পুরাণ
৫. মৎস্য পুরাণ
৬. পদ্মপুরান
৭. বরাহপুরাণ
শিব পুরাণ মতে গণেশের উত্পত্তি
কৈলাস থাকার সময় একদিন দেবী পার্বতী স্নান করতে যাওয়ার আগে তার স্নান ঘরের দরজার কাছে ভগবান শিবের একনিষ্ঠ অনুচর নন্দীকে দ্বার রক্ষীর কাজে নিয়োগ করেন। তিনি তাকে বলে দেন তিনি স্নানে থাকার সময় কেউ যেন তার স্নান কক্ষে প্রবেশ করে না। কিন্তু হঠাৎ দেখা যায় দেবাদিদেব মহাদেব সেইখানে এসে হাজির হয় এবং স্নান কক্ষে প্রবেশ করেন, নন্দী মহেশ্বরকে স্নান কক্ষে প্রবেশের আগে কোন বাধা দেন নি।
উক্ত ঘটনায় দেবী পার্বতী নন্দীর উপর খুব রেগে যান এবং তাকে শুধু শিবের একান্ত অনুগামী বলে ভর্ৎসনা করেন। তখন তিনি তার একজন খুবই অনুগামী একজন পাওয়ার কামনা মনে মনে করেন এবং সেই কথা তার দুই বান্ধবী জয়া এবং বিজয়াকে এই কথা জানান। তারা দুজনে তাকে পরামর্শ দেন যে সে তার পছন্দের একজন অনুচর তৈরি করতেই পারেন।
আর সেই পরামর্শে সামনের জলাশয় থেকে মাটি নিয়ে তিনি একটি শিশু মূর্তি বা দেহ তৈরি করেন। তারপর তাতে প্রাণ প্রতিষ্ঠা করেন।যা আমরা গণেশ নামে জানি।তারপর এই কুমারকে তিনি খুবই ভালোবাসা দিয়ে নিজের সবচেয়ে পছন্দের সন্তান রুপে আদর করতে থাকেন। একদিন তিনি তার এই সন্তানকে একইরকম ভাবে স্নান করতে যাওয়ার সময় দ্বার রক্ষীর দায়িত্ব দিয়ে যান।
তখন সেইস্থানে আবার মহাদেব এসে হাজির হলে তিনি তাকে স্নান কক্ষে প্রবেশ করতে বাধা দেন। ভগবান শিব তাকে প্রবেশ করতে দেওয়ার জন্য জেদ করলে, গণেশ তাকে যুদ্ধে আহবান করেন এবং গণেশের শক্তিতে তিনি বিস্মিত হন। পরে যখন ভগবান শিবের ক্রোধ চরম সীমায় পৌঁছে যায় তখন তিনি তার ত্রিশূল দিয়ে গণেশের মস্তক খন্ডন করেন। পার্বতী যখন স্নান কক্ষ থেকে বেরিয়ে এসে গণেশের নিথর দেহ দেখতে পান এবং পুরো ঘটনা শুনে প্রচন্ড ক্রোধিত হন এবং মহামায়া মূর্তি ধারন করে সমগ্র বিশ্ব ব্রম্ভান্ড বিনাশ করতে উদ্যত হন।
তখন সমগ্র দেবতারা মাতা পার্বতীকে অনুরোধ করেন এই বিনাশ তিনি যেন না করেন। মাতা পার্বতী তখন দুটি শর্ত রাখেন দেবতাদের কাছে। প্রথম শর্তে তিনি গণেশের পুনরায় প্রাণ প্রতিষ্ঠার দাবি জানান এবং দ্বিতীয় শর্তে তিনি বলেন যে তার এই পুত্র গণেশ যেন সমগ্র দেবতাদের পূজার সর্বাগ্রে পূজিত হন। তার দাবি সকল দেবতারা শুনে তৎক্ষণাৎ রাজি হয়ে যান।
এইসময় দেবতারা ভগবান শিবের কাছে যান, ইতিমধ্যেই শিবের ক্রোধ কমে এসেছিল। তিনি তখন তার অনুচরদের জানান উত্তর দিকে যে প্রাণীকে প্রথমেই দেখতে পাবে, তার মুন্ড যেন নিয়ে আসা হয়, সেই মতো তারা বেরিয়ে যায়। প্রথমেই একটি হস্তী শাবক দেখতে পান তারা, আর তাই তারা হস্তী শাবকের মুন্ডটি নিয়ে আসেন। তারপর ভগবান ব্রম্ভা নিজের হাতে সেই মুন্ড নিয়ে গণেশের দেহে জুড়ে দিয়ে প্রাণ প্রতিষ্ঠা করেন। এইভাবেই গণেশের মুখ হয়ে ওঠে হস্তী মুখ। আর এইভাবেই সমগ্র দেবতার পূজার আগে বিঘ্নেশ গণেশের পূজার প্রচলন শুরু হয়। (EVM News)