ব্যুরো নিউজ, ৯ ফেব্রুয়ারি: রূপনারায়ণ নদে নৌকাডুবি হয়ে কমপক্ষে ৫ জন নিখোঁজ হয়েছেন। জানা গিয়েছে, নিখোঁজেরা হলেন ৭ বছরের ঋষভ পাল, ১৭ বছরের প্রীতম মান্না, অচ্যুৎ সাহা, অমর ঘোষ ও তাঁর স্ত্রী সঙ্গীতা ঘোষ। প্রীতমের বাড়ি মানকুরে। বাকি ৪ জনের বাড়ি হাওড়ার বেলগাছিয়ার লিচুবাগান এলাকায়। বৃহস্পতিবার বিকেলে ঘটনাটি ঘটেছে দাসপুর থানার দুধকোমরা ও হাওড়ার বাগনান থানার চিতনান এলাকার মাঝে রূপনারায়ণ নদে। পুলিশ জানিয়েছে, লিলুয়া, বেলগাছিয়া, ও কুঞ্জপাড়া থেকে মহাদেব কর্মকার, অচ্যুত সাহা ও অমল ঘোষ এই তিনজন তাদের ফ্যামিলি নিয়ে ঘুরতে গিয়েছিলেন।
রূপনারায়ণে নৌকাডুবির রহস্য
নিখোঁজদের সন্ধানে এলাকার মাঝিদের নিয়ে পুলিশ রূপনারায়ণ নদের মানকুর বাক্সি সহ বিভিন্ন জায়গায় তল্লাশি করছে। ইতিমধ্যেই সেখানে পৌঁছে গিয়েছে জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরের টিমও। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছান জেলাশাসক পি দীপাপ্রিয়া, হাওড়ার গ্রামীণ পুলিশের সুপার স্বাতী ভাঙ্গালিয়া। তাঁর সঙ্গে ছিলেন আমতার বিধায়ক সুকান্ত পাল, বাগনান এক নম্বর পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য সুপ্রিয় সিংহ প্রমূখ। জানা গিয়েছে, মোট ১৮ জনের একটি দল মানকুর থেকে নৌকায় চেপে পশ্চিম মেদিনীপুরের দুধকুমরার ত্রিবেনী পার্কে চড়ুইভাতি করতে গিয়েছিলেন। চড়ুইভাতি শেষে তারা ফের নৌকায় চেপেই মানকুরের দিকে ফিরছিলেন। সেই সময়ই কোন কারণে নৌকা কাত হয়ে ডুবে যায়। সঙ্গে সঙ্গে সকলেই নদীতে পড়ে যান।
সরস্বতী পুজোকে কেন বাঙালির ভ্যালেন্টাইনস ডে বলা হয়?
নৌকা ডুবতে দেখে নদীতে থাকা ও পাড়ে থাকা অন্যান্য নৌকার মাঝিরা নৌকা নিয়ে নদীতে চলে যায়। উদ্ধার কাজ করেন। এখনো পর্যন্ত ১৩ জনকে উদ্ধার করা গেলেও, বাকিরা নিখোঁজ। তবে আজ সঙ্গীতা ঘোষের মৃতদেহ পাওয়া গিয়েছে। জানা গিয়েছে, হাওড়ার বেলগাছিয়ার লিচুবাগান থেকে ১৩ জন এসেছিলেন। আর মানকুরের ৫ জন ছিলেন। মহাদেব কর্মকার ছিলেন মূল উদ্যোক্তা। তিনি তার পরিচিত গণেশ মান্নার বাড়িতে মানকুরে এসেছিলেন। সেখান থেকেই তারা চড়ুইভাতি করতে যাওয়ার পরিকল্পনা করেছিলেন। গণেশ মান্না নিজেও এদিন পিকনিকে গিয়েছিলেন। তিনি বলেন যাওয়ার সময় নৌকা দুটি খেপে ১৮ জনকে ভাগ করে নিয়ে গিয়েছিলেন। আর ফেরার সময় একটি ক্ষেপেই সকলকে নিয়ে ফিরছিলেন। এতেই সমস্যা হয়েছে। যাত্রীদের মধ্যে অনেকের বক্তব্য নৌকায় জল ছিল। তাঁরা নৌকার মাঝিকে জল বের করে নৌকা ছাড়ার কথা বললেও তিনি তা শোনেননি।
এদিকে এই খবর পেয়ে বেলগাছিয়ার লিচু বাগানে নেমে এসেছে উৎকণ্ঠা। জানা গিয়েছে, ঘটনার খবর পেয়ে আটটা- সাড়ে আটটা নাগাদ লোকেরা যে যার নিজেদের ব্যক্তিগত গাড়ি করে মানকুরের উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছিলেন। এখানে দশটা সাড়ে দশটা নাগাদ পৌঁছান ও তারপরেই নৌকায় করে দুধকোমরার উদ্দেশ্যে রওনা দেন। দুধকোমরায় তাঁরা পৌঁছেছিলেন সাড়ে বারোটা নাগাদ। বেলগাছিয়ার বাসিন্দারা জানিয়েছেন, বিকেল চারটে সাড়ে চারটের পর থেকে তাঁরা কারো আর কোন ফোনে পাননি। সন্ধ্যার পর মানকুরের লোকেদের তাঁরা ফোন করে জানতে পারে নৌকাডুবি হয়েছে। এখন তাদের একটাই প্রার্থনা সকলে যেন জীবিত অবস্থায় বাড়িতে ফিরে আসেন। ইভিএম নিউজ