দুর্গাপূজার সময় ডাকের সাজ এক অন্য মাত্রায় নিয়ে যায় প্রতিমাকে । কিন্তু কোথা থেকে এসেছে এই ডাকের সাজ কথাটা ? দুর্গা বা অন্যান্য প্রতিমার যে সাজ ডাক বা পোস্ট অফিসের পার্সেলের মাধ্যমে কলকাতার এসে পৌঁছাত, তা থেকেই নামকরণ হয়েছিল ‘ডাকের ‘মা’।

কুমোরটুলি মৃৎি এর প্রতিষ্ঠা যাঁর হাত ধরে, সেই গোপেশ্বর পালের শিষ্য রমেশ পাল কলকাতার বারোয়ারি ও অন্যান্য পুজোর প্রতিমার ডাকের সাজ তৈরির কাজ শুরু করেন।১৯৩৪ সালে রমেশ পালের সঙ্গে যোগাযোগ হয় শোভাবাজার স্ট্রিটের আশুতোষ মালাকারের।

আশুতোষ মালাকার বলেন, ‘এতো খরচ করে ডাক মাশুল দিয়ে কৃষ্ণনগর থেকে ডাকের সাজ আনানোর দরকার কী। রমেশই তো আছেন। এরপর, রমেশ -আশুতোষ জুটির জরির কাজের সাজ হয়ে উঠলো শোলার কাজ, সেই শোলার কাজের ডাকের সাথের কলকাতার বারোয়ারি পুজোয় ডাকের সাজের ব্যবহার শুরু হয় । ‘ এর পর থেকে বাগবাজার, দক্ষিণের একডালিয়ার পুজোয় ডাকের সাজে একের পর এক বাজিমাত করতে থাকেন এই জুটি।

নদীয়া ছেড়ে মূলত আশুতোষ মালাকারের অনুপ্রেরণায় এক এক করে গোষ্ঠীর মানুষজন এই শহরে এসে ঘাঁটি গাড়তে শুরু করেন। আশুতোষ বাবুর পুত্র শম্ভুনাথ রাজ ভবনের সরকারি চাকরিপেয়েও করেন নি। পৈতৃক পেশাকে আঁকড়ে ধরেন। তবে একে একে এই সাজের শিল্পীর সংখ্যা কমছে । শম্ভুনাথ হয়ে দাঁড়িয়েছেন কলকাতার একমাত্র বনেদি ডাকের সাজের শিল্পী ।

তবে পরম্পরা বজায় রাখতে শম্ভুনাথ মালাকারও তার ছেলেকে এই কাজের সঙ্গে যুক্ত করেছেন । তার বক্তব্য , শোলার ডাকের সাজ তৈরি করার সমস্যা হল জলাভূমি বুজিয়ে মাল্টিস্টোর তৈরি করা এবং রিয়েলেস্টেড ব্যবসার প্রসারে শহরে জলাভূমির অভাব দেখা দিচ্ছে এই অভাবের কারণে ভালো শোলা পাওয়া যায় না এখানে । তাই গুণমানের শোলা আনতে হয় বাংলাদেশ থেকে। আর যার লাভ থাকে অতি অল্প। তার ওপর দুর্গাপূজোয় থিমের বাড়ন্তে এই সাবেকিয়ানা সাজ একেবারেই অবলুপ্ত । ‘

বিশ্ব জুড়ে

গুরুত্বপূর্ণ খবর

বিশ্ব জুড়ে

গুরুত্বপূর্ণ খবর