ইভিএম নিউজ ব্যুরোঃ দলের পঞ্চায়েতপ্রধানের বিরুদ্ধে অনাস্থা আনলেন দলেরই পঞ্চায়েত সদস্যরা। একটি নয়। একসঙ্গে দু’ দুটি গ্রামপঞ্চায়েতে এমন ঘটনায়, আসন্ন পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে বেজায় অস্তিত্ব তৈরি হয়েছে, পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা তৃণমূলের অন্দরে। অস্বস্তিকর এই দুটি ঘটনা ঘটেছে, জেলার মোহনপুর ব্লকের ৩নং মোহনপুর গ্রামপঞ্চায়েত এবং ২ নং শিয়ালসাহি গ্রামপঞ্চায়েতে।
জানা গেছে, মোহনপুর গ্রামপঞ্চায়েতের ১৯ টি আসনের মধ্যে একজন বিজেপি সদস্যকে বাদ দিলে বাকি ১৮ টিই রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেসের দখলে। এর মধ্যে পঞ্চায়েতপ্রধানকে বাদ দিয়ে, বাকি ১৭ জনের মধ্যে ১২ জনই প্রধানের বিরুদ্ধে অনাস্থা এনেছেন। তাঁদেরই অন্যতম শুভেন্দু কর নামে এক তৃণমূল পঞ্চায়েত সদস্যের দাবি এই পঞ্চায়েতের প্রধান এলাকার মানুষ তো বটেই, এমনকী দলীয় পঞ্চায়েত সদস্যদের সঙ্গেও কোনও সহযোগিতা করেন না। একক সিদ্ধান্তেই পঞ্চায়েতের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ কাজকর্ম করে থাকেন। এনিয়ে একাধিকবার জানানোর পরেও দলের ব্লক বা জেলানেতৃত্ব ওই প্রধানের বিরুদ্ধে কোনওরকম ব্যবস্থা নেননি। তাই একপ্রকার বাধ্য হয়েই প্রধানের বিরুদ্ধে তাঁরা অনাস্থা প্রস্তাব এনেছেন। বিডিওর কাছে সেই প্রস্তাব জমাও দেওয়া হয়েছে। যদিও দলের পঞ্চায়েত সদস্যদের এই অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে উড়িয়ে দিয়েছেন, মোহনপুর গ্রামপঞ্চায়েতের প্রধান রুনা পাত্র।
অন্যদিকে ওই মোহনপুর ব্লকেরই শিয়ালসাহি গ্রামপঞ্চায়েতের ১৫ জন তৃণমূল সদস্যের মধ্যে অন্তত ৮ জন, প্রধানের বিরুদ্ধে একইভাবে বিডিওর কাছে অনাস্থা প্রস্তাব জমা দিয়েছেন। শিয়ালশাহি গ্রামপঞ্চায়েতের সদস্য খলিল মল্লিকের অভিযোগ, পঞ্চায়েতপ্রধান দুর্নীতিগ্রস্ত। নিজের দলের সদস্যদের আনা সেই অভিযোগ, যথারীতি অস্বীকার করেছেন, পঞ্চায়েতপ্রধান ভগবান মাইতি। পাল্টা তাঁর দাবি তাঁকে উন্নয়নের কাজ করতে বাধা দিয়ে, দলীয় পঞ্চায়েত সদস্যদেরই কয়েকজন, তাঁদের হয়ে কাজ করতে চাপ দিচ্ছেন। সময় হলে দলীয় পঞ্চায়েত সদস্যদের সেইসব কীর্তি তিনি প্রকাশ্যে আনবেন বলেও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, শিয়ালশাহি গ্রামপঞ্চায়েতের প্রধান ভগবান মাইতি।
প্রসঙ্গত, পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে একাধিক দুর্নীতির অভিযোগ থেকে মানুষের নজর ঘোরাতে, কার্যত মাথার ঘাম পায়ে ফেলছে, শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেসের শীর্ষনেতৃত্ব। ফলে, মহাগুরুত্বপূর্ণ সেই নির্বাচনের আগে পশ্চিম মেদিনীপুরের মত গুরুত্বপূর্ণ জেলায়, দলেরই দুটি পঞ্চায়েতে এই গোষ্ঠীকোন্দলের প্রভাব ভোটের বাক্সেও শাসকদলকে বেগ দেবে কিনা, এখন সেটাই লাখটাকার প্রশ্ন। ব্যুরো রিপোর্ট, ইভিএম নিউজ।